Logo
সোমবার, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪
logo

সরকারকে উন্নয়ন অস্বীকার আইন করার পরামর্শ রুমিনের


সাংবাদিকের নাম   প্রকাশিত:  ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:৫০ এএম

সরকারকে উন্নয়ন অস্বীকার আইন করার পরামর্শ রুমিনের

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সরকারকে নিরাপত্তা দিচ্ছে না বলে মনে করেন বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা। তাই সরকারকে হলোকাস্ট ডিনায়াল অ্যাক্টের মতো উন্নয়ন অস্বীকার আইন করার পরামর্শ দেন তিনি, যার মাধ্যমে সরকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সমালোচকদের জেলে দিতে পারবে।

বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনা সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ পরামর্শ দেন।

পদ্মা সেতু নিয়ে টিকটক ভিডিও করায় শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা ও রিমান্ডের প্রসঙ্গ তুলে ধরে রুমিন ফারহানা বলেন, এ দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সম্পর্কে সবাই জানে। কথায় কথায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা, গ্রেপ্তার, রিমান্ড নেওয়া কোনো বিষয় না।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সরকারকে খুব বেশি সরকারকে নিরাপত্তা দিচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি প্রস্তাব করব, এখন সময় এসেছে হলোকাস্ট ডিনায়াল অ্যাক্টের মতো উন্নয়ন অস্বীকার আইন করার। যারা মানবাধিকার, ভোটাধিকার, সুশাসন, ন্যায় বিচার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের কথা বলে, তাদের না হয় উন্নয়ন অস্বীকার করার মামলায় জেলে নেওয়া যাবে যতদিন খুশি ততদিন।

রুমিন ফারহানা বলেন, সংসদ অতিরিক্ত মিষ্টি হয়ে গেছে। এত বেশি মিষ্টি স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো না। তাই আমি কিছু তেতো কথা বলব, যাতে ভারসাম্যটা রক্ষা হয়। আর সেই সঙ্গে প্রদীপের নিচে অন্ধকারের দিকেও আমরা তাকাতে পারি।

তিনি বলেন, লিথুনিয়ার কৌনাস পৌরসভার মেয়র একটি শিপিং কন্টেইনারের মধ্যে দেড় কোটি টাকায় টয়লেট বানিয়েছিলেন। একই মানের একটি টয়লেট পাশের টেনিস ক্লাবে নির্মাণ করা হয় সাড়ে চার লাখ টাকায়। মানুষ মজা করে ওই টয়লেটের নাম দিয়েছিল সোনার টয়লেট। একই রকম কিংবা একটু বেশি দৈর্ঘ্যের বিশ্বের অন্যান্য সেতুর সঙ্গে পদ্মা সেতুর বর্তমান ব্যয় তুলনা করলে বলতেই আমাদের সোনার সেতু। এটা কৌনাস সোনার টয়লেট মামলার মতো, বাংলাদেশ সোনার সেতু মামলাও দুর্নীতির উদাহরণ হিসাবে থাকবে।

এ সময় পদ্মা সেতুর সঙ্গে ভারতের কয়েকটি সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের কথা তুলে ধরেন রুমিন ফারহানা। এ সেতুতে নির্মাণ ব্যয় দফায় দফায় বাড়ানো হয় বলে জানান তিনি। ভারতের ১০ কিলোমিটারের ৬ লেনের সেতু নির্মাণে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বলে জানান তিনি। রুমিন ফারহানা বলেন, এ টাকা দিয়ে একই দৈর্ঘ্যের ১০টি সেতু সেখানে করা যেতে পারে। লুটপাট আর কাকে বলে।

পদ্মা সেতুতে রেল যোগাযোগের অন্যতম কারণ ছিল পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের সংযোগ- উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার বহু টাকা নয়ছয় করে পায়রাকে আর গভীর সমুদ্রবন্দর করেনি। সুতরাং রেল কন্টেইনার পরিবহনের যে পরিকল্পনা হয়েছিল, সেটিও হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, রেলসেতু আর লাভজনক নয়।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু এমনই এক গোল্ডেন সেতু, যার পরতে পরতে কেবল দুর্নীতি আর দুর্নীতি। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের ৫৫ কিলোমিটার নির্মাণ হচ্ছে সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকায়। অর্থ্যাৎ প্রতি কিলোমিটার ২০০ কোটি টাকার বেশি।

বিশ্বব্যাংকের ঋণ সরকার না নেওয়ার কারণ হিসাবে রুমিন দাবি করেন, বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ নিলে জবাবদিহিতা থাকতে হয়। কিন্তু এই সরকার হরিলুট করেছে, সেটা তাদের থেকে ঋণ নিলে সম্ভব হতো না। যতই অস্বাভাবিক হোক, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার জো নেই। আজ সংসদের পরিবেশের দিকে তাকালে মনে হয়, কী বীভৎস, অসহিষ্ণু এক সংসদ।